আবিরের আত্মহত্যার কথা শোনার
সাথে সাথে ছুটে গিয়েছিলাম রেল লাইনে।
আবিরের ছিন্ন বিচ্ছিন্ন লাশের
দিকে দ্বিতীয় বার তাকাতে পারিনি। রেল
লাইনে কাটা পরা আবিরের লাশের পার্শ্বেই
পরে থাকা ডায়রিটা সবার
অগোচরেই আমি হাতে তুলে নিয়েছিলাম।
ডায়েরিটায় কোন ক্ষত চিহ্ন লাগেনি।
আবিরের আত্মহত্যার কারণ সবার
কাছে অজানা রয়ে গেলেও আমার বুঝতে আর বাকী রইলনা আবির কেন আত্মহত্যা করল। আবিরের মৃত্যুর
অনেক দিন অতিবাহীত হলেও ডায়রিটা অনেক
বার খুলতে চেয়েও সাহস পাইনি। আজ আর
নিজেকে সামলাতে পারলাম না।
ডায়রিটা হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করলাম।
আবির লিখেছে,প্রিয় নীলা, তোমার
কি মনে আছে আমাদের ভালোবাসার পথ
চলা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
জানি ভুলতে পারনি। আমিও না। এই
তো সেই দিন। কমলাপুর রেলষ্টেশনে তোমার
সাথে পরিচয়। অনেক বার চাওয়ার পর
তোমার মোবাইল নম্বর টা দিয়েছিলে।
মাঝে মাঝে কুশল বিনিময় ছাড়া তেমন কোন
কথা হতো না। তুমি কিন্তু আমার আবৃত্তির
খুব ভক্ত ছিলে।
তোমাকে আবৃত্তি শোনাতে শোনাতে কত সকাল
যে সন্ধে হয়েছে তার কোন হিসেব নেই। এর
পর আপনি থেকে তুমি। আর এভাবেই কখন
যে বন্ধুত্বের সাকো পার হয়ে ভালোবাসার
রাজ্যে পা দিয়েছি বুঝতেই পারিনি। তোমার
মনে আছে? একটা দিন তোমার
সাথে দেখা না করলে তুমি বড্ড মন খারাপ
করতে। তোমার সাথে দেখা করতে ক্লাশ
ফাঁকি দিতে কতই না মিথ্যে অজুহাত দাড়
করাতে হয়েছে। এইতো সে দিন,
রাস্তার ফুতপাত ধরে হাটছিলাম
দুজন। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলো।
আমি একটা ছাদের নিচে আশ্রয়
নিতে চাইছিলাম কিন্তু তুমি আমার হাত
জড়িয়ে ধরে খোলা আকাশের
নিচে দাড়িয়ে রইলে। বৃষ্টি আমাদের
ভিজিয়ে দিয়ে গেল আপন খেয়ালে। অপরুপ
মুগ্ধতায় বৃষ্টি ভেজা তোমাকে আমি নতুন
করে আবিস্কার করলাম। নদী পাড়ের
সাড়ি সাড়ি গাছের নিচে বসে কত বার
সূর্যকে বিদায় জানিয়েছি তার কোন হিসেব
নেই।
আমার জন্য নাকি তোমার অনেক টেনশন
হয়। আমি খেয়েছি কি না, ফোন
দিয়ে জিজ্ঞেস না করে তুমি কোন দিনই
মুখে খাবার তুলতে না। বার বার
তোমাকে আমি একটা কথা বলতাম,
নীলা তুমি আমাকে যতটা ভালোবাসো আমি হয়ত
তোমার ভালোবাসার
কাছে হেরে যাচ্ছি। যদি আমার দুই একদিনের জন্য ঢাকার বাহিরে অন্য
কোথাও যেতে হত তোমার চোখ দুটি ছল ছল
করে উঠতো। তোমার মলিন মুখের
দিকে আমি তাকাতেই পারতাম না।
কত স্বপ্নই না ছিল আমাদের। বিয়ে হবে,
ছোট্ট একটা ঘর হবে আমাদের।
আমি বলেছিলাম আমাদের প্রথম সন্তান
হবে মেয়ে আর তুমি বললে ছেলে। এ
নিয়ে তো তোমার সাথে রীতিমত যুদ্ধই
বেধে গিয়েছিল। জানি, আজ তোমার
বিয়ে হয়েছে, ঘর- সংসারও হয়েছে।
এতো দিনে হয়তো তোমার
স্বপ্নগুলো ধরা দিতে শুরু করেছে। শুধূ
যেখানে আমার থাকার কথা ছিল সেখানে আজ
অন্য কেউ।
যে তুমি একদিন
আমাকে না দেখে থাকতে পারতে না, এক
ঘন্টা মোবাইলে কথা না হলে অস্থির
হয়ে যেতে সেই তুমি কেমন
করে আমাকে ভুলে গেলে ? মানুষ
মরে গেলে নাকি তারা হয়ে আকাশে থেকে যায়।
কিন্তু তুমি আমার সীমানা ছেড়ে তার থেকেও
বেশি দূরে চলে গেছো।
কবুল নামক একটা মন্ত্র
পরে তুমি আমাকে এভাবে বিসর্জন দিয়ে অন্য
কউকে জীবন সঙ্গী করবে এটা আমি কোন
দিন ভাবতে পারিনি। কী ভুল ছিল আমার
বলো ? কেন এভাবে আমাকে নিস্ব
করে দিয়ে চলে গেলে? ? কত দিন হয় তোমার চির
চেনা কণ্ঠস্বর শুনতে পাইনা। খাবার
সামনে নিয়ে বসে থাকি তোমার ফোনের
আশায়। মনে হয় এই বুঝি তুমি ফোন
দিয়ে শাষনের স্বরে বলবে, ’’আবির
তুমি এখনও খেতে বসনি? এখনও
খাওনি কেন?” বিন্তু তোমার ফোন
আসে না।
ট্রেনের হুইসেল শুনে কতবার
ষ্টেশনে ছুটে গিয়েছি, যদি তুমি আসো ?
ট্রেনের হুইসেল আমার হৃদয়ের হাহাকার
কে চাপা দিয়ে চলে গেছে আপন ঠিকানায়।
তুমি আসোনি। এখনো তোমার প্রতিক্ষায়
ষ্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায়।
আমাদের জীবন টা আজ ট্রেনের লাইনের মতই
সত্যি। ট্রেন লাইন পাশাপাশি থাকলেও
কখনও এক বিন্দুতে এসে মিশে না। অনেক
দিন তোমার হাত ধরে রেল
লাইনে পাশাপাশি হাটা হয় না। আজ
একবার আসবে? সেই পুরোনো ঠিকানায়।
গোধুলীর আবছা আলোয় তোমার হাত
ধরে শ্লিপারের ওপর দিয়ে হেটে যাবো আর
তোমাকে আবৃত্তি শোনাবো।
তোমাকে কিন্তু আজ আসতেই হবে।
আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো।
আসবে কিন্তু। (১৯ এপ্রিল, সন্ধা ৫ টা ১৯
মিনিট)
আবিরের ডায়রির
লেখাগুলো পড়তে পড়তে আমার চোখ
বেয়ে কফোটা জল গড়িয়ে পড়েছে ডায়রির
পাতায়। এই লেখাগুলোর তারিখের
সাথে আবিরের মৃত্যুর তারিখ
মিলিয়ে দেখলাম। আবির এই
লেখাগুলো আত্মহত্যার
আগমূহুর্তে লিখেছিল।
Note: ভালবেসে এতটা কষ্ট পেতে হয় কেন?
তাহলে মানুষ ভালবাসে কেন??
একবার কারও হাত ধরে তার হাত কখনও ছেড়ে দিবেন না।
কারন এতে আপনার কিছু না হলেও ঐ মানুষটার কিন্তু বুকটা ফেটে যায়
পুরো গল্পটি pdf আকারে ডাওনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন
(লিঙ্কে ক্লিক করে উপরের ডান পাশ থেকে Skip Ad এ ক্লিক করুন)
ভাল লাগলে আামর ফেসবুক আইডি থেকে ঘুড়ে আসতে পারেন
সাথে সাথে ছুটে গিয়েছিলাম রেল লাইনে।
আবিরের ছিন্ন বিচ্ছিন্ন লাশের
দিকে দ্বিতীয় বার তাকাতে পারিনি। রেল
লাইনে কাটা পরা আবিরের লাশের পার্শ্বেই
পরে থাকা ডায়রিটা সবার
অগোচরেই আমি হাতে তুলে নিয়েছিলাম।
ডায়েরিটায় কোন ক্ষত চিহ্ন লাগেনি।
আবিরের আত্মহত্যার কারণ সবার
কাছে অজানা রয়ে গেলেও আমার বুঝতে আর বাকী রইলনা আবির কেন আত্মহত্যা করল। আবিরের মৃত্যুর
অনেক দিন অতিবাহীত হলেও ডায়রিটা অনেক
বার খুলতে চেয়েও সাহস পাইনি। আজ আর
নিজেকে সামলাতে পারলাম না।
ডায়রিটা হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করলাম।
আবির লিখেছে,প্রিয় নীলা, তোমার
কি মনে আছে আমাদের ভালোবাসার পথ
চলা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
জানি ভুলতে পারনি। আমিও না। এই
তো সেই দিন। কমলাপুর রেলষ্টেশনে তোমার
সাথে পরিচয়। অনেক বার চাওয়ার পর
তোমার মোবাইল নম্বর টা দিয়েছিলে।
মাঝে মাঝে কুশল বিনিময় ছাড়া তেমন কোন
কথা হতো না। তুমি কিন্তু আমার আবৃত্তির
খুব ভক্ত ছিলে।
তোমাকে আবৃত্তি শোনাতে শোনাতে কত সকাল
যে সন্ধে হয়েছে তার কোন হিসেব নেই। এর
পর আপনি থেকে তুমি। আর এভাবেই কখন
যে বন্ধুত্বের সাকো পার হয়ে ভালোবাসার
রাজ্যে পা দিয়েছি বুঝতেই পারিনি। তোমার
মনে আছে? একটা দিন তোমার
সাথে দেখা না করলে তুমি বড্ড মন খারাপ
করতে। তোমার সাথে দেখা করতে ক্লাশ
ফাঁকি দিতে কতই না মিথ্যে অজুহাত দাড়
করাতে হয়েছে। এইতো সে দিন,
রাস্তার ফুতপাত ধরে হাটছিলাম
দুজন। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলো।
আমি একটা ছাদের নিচে আশ্রয়
নিতে চাইছিলাম কিন্তু তুমি আমার হাত
জড়িয়ে ধরে খোলা আকাশের
নিচে দাড়িয়ে রইলে। বৃষ্টি আমাদের
ভিজিয়ে দিয়ে গেল আপন খেয়ালে। অপরুপ
মুগ্ধতায় বৃষ্টি ভেজা তোমাকে আমি নতুন
করে আবিস্কার করলাম। নদী পাড়ের
সাড়ি সাড়ি গাছের নিচে বসে কত বার
সূর্যকে বিদায় জানিয়েছি তার কোন হিসেব
নেই।
আমার জন্য নাকি তোমার অনেক টেনশন
হয়। আমি খেয়েছি কি না, ফোন
দিয়ে জিজ্ঞেস না করে তুমি কোন দিনই
মুখে খাবার তুলতে না। বার বার
তোমাকে আমি একটা কথা বলতাম,
নীলা তুমি আমাকে যতটা ভালোবাসো আমি হয়ত
তোমার ভালোবাসার
কাছে হেরে যাচ্ছি। যদি আমার দুই একদিনের জন্য ঢাকার বাহিরে অন্য
কোথাও যেতে হত তোমার চোখ দুটি ছল ছল
করে উঠতো। তোমার মলিন মুখের
দিকে আমি তাকাতেই পারতাম না।
কত স্বপ্নই না ছিল আমাদের। বিয়ে হবে,
ছোট্ট একটা ঘর হবে আমাদের।
আমি বলেছিলাম আমাদের প্রথম সন্তান
হবে মেয়ে আর তুমি বললে ছেলে। এ
নিয়ে তো তোমার সাথে রীতিমত যুদ্ধই
বেধে গিয়েছিল। জানি, আজ তোমার
বিয়ে হয়েছে, ঘর- সংসারও হয়েছে।
এতো দিনে হয়তো তোমার
স্বপ্নগুলো ধরা দিতে শুরু করেছে। শুধূ
যেখানে আমার থাকার কথা ছিল সেখানে আজ
অন্য কেউ।
যে তুমি একদিন
আমাকে না দেখে থাকতে পারতে না, এক
ঘন্টা মোবাইলে কথা না হলে অস্থির
হয়ে যেতে সেই তুমি কেমন
করে আমাকে ভুলে গেলে ? মানুষ
মরে গেলে নাকি তারা হয়ে আকাশে থেকে যায়।
কিন্তু তুমি আমার সীমানা ছেড়ে তার থেকেও
বেশি দূরে চলে গেছো।
কবুল নামক একটা মন্ত্র
পরে তুমি আমাকে এভাবে বিসর্জন দিয়ে অন্য
কউকে জীবন সঙ্গী করবে এটা আমি কোন
দিন ভাবতে পারিনি। কী ভুল ছিল আমার
বলো ? কেন এভাবে আমাকে নিস্ব
করে দিয়ে চলে গেলে? ? কত দিন হয় তোমার চির
চেনা কণ্ঠস্বর শুনতে পাইনা। খাবার
সামনে নিয়ে বসে থাকি তোমার ফোনের
আশায়। মনে হয় এই বুঝি তুমি ফোন
দিয়ে শাষনের স্বরে বলবে, ’’আবির
তুমি এখনও খেতে বসনি? এখনও
খাওনি কেন?” বিন্তু তোমার ফোন
আসে না।
ট্রেনের হুইসেল শুনে কতবার
ষ্টেশনে ছুটে গিয়েছি, যদি তুমি আসো ?
ট্রেনের হুইসেল আমার হৃদয়ের হাহাকার
কে চাপা দিয়ে চলে গেছে আপন ঠিকানায়।
তুমি আসোনি। এখনো তোমার প্রতিক্ষায়
ষ্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায়।
আমাদের জীবন টা আজ ট্রেনের লাইনের মতই
সত্যি। ট্রেন লাইন পাশাপাশি থাকলেও
কখনও এক বিন্দুতে এসে মিশে না। অনেক
দিন তোমার হাত ধরে রেল
লাইনে পাশাপাশি হাটা হয় না। আজ
একবার আসবে? সেই পুরোনো ঠিকানায়।
গোধুলীর আবছা আলোয় তোমার হাত
ধরে শ্লিপারের ওপর দিয়ে হেটে যাবো আর
তোমাকে আবৃত্তি শোনাবো।
তোমাকে কিন্তু আজ আসতেই হবে।
আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো।
আসবে কিন্তু। (১৯ এপ্রিল, সন্ধা ৫ টা ১৯
মিনিট)
আবিরের ডায়রির
লেখাগুলো পড়তে পড়তে আমার চোখ
বেয়ে কফোটা জল গড়িয়ে পড়েছে ডায়রির
পাতায়। এই লেখাগুলোর তারিখের
সাথে আবিরের মৃত্যুর তারিখ
মিলিয়ে দেখলাম। আবির এই
লেখাগুলো আত্মহত্যার
আগমূহুর্তে লিখেছিল।
Note: ভালবেসে এতটা কষ্ট পেতে হয় কেন?
তাহলে মানুষ ভালবাসে কেন??
একবার কারও হাত ধরে তার হাত কখনও ছেড়ে দিবেন না।
কারন এতে আপনার কিছু না হলেও ঐ মানুষটার কিন্তু বুকটা ফেটে যায়
পুরো গল্পটি pdf আকারে ডাওনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন
(লিঙ্কে ক্লিক করে উপরের ডান পাশ থেকে Skip Ad এ ক্লিক করুন)
ভাল লাগলে আামর ফেসবুক আইডি থেকে ঘুড়ে আসতে পারেন
No comments:
Post a Comment